শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ১০:০৪ পূর্বাহ্ন
বেতাগী প্রতিনিধি॥ শীতের মৌসুমে উপকূলীয় জনপদ বরগুনার বেতাগীতে খালগুলো শুকিয়ে গেছে। অধিকাংশ খালে পানি নেই। কিছু কিছু খালে পানি থাকলেও শীতের সময় তা তলানিতে থাকে। ফলে কৃষক ও জেলে পরিবারগুলো এ মৌসুমে দুর্ভোগে থাকে।
উপজেলা মৎস্য অফিস থেকে তথ্যানুসারে ও সরেজমিন দেখা গেছে, একটি পৌরসভাসহ ৭টি ইউনিয়ন ও দেড় লক্ষাধিক জনসংখ্যা অধ্যুষিত এ উপজেলায় ছোট-বড় ৪০টি খাল, ৭টি বিল, প্লাবনভূমি ১৪টি, ১১ হাজার ৬২৩টি পুকুর ও ১টি নদী রয়েছে। এ থেকে বছরে ৩০৬০ মেট্রিক টন মাছ উৎপাদন হচ্ছে। জনপ্রতি দৈনিক মাছের চাহিদা ৬৫ গ্রাম। সে হিসেবে এ উপজেলায় মোট জনসংখ্যার বাৎসরিক মাছের চাহিদা ২৮০০ মেট্রিক টন। চাহিদা মিটিয়ে বছরে উদ্বৃত্ত থাকে ২৬০ মেট্রিক টন।
উপজেলার ৪০টি খালের মধ্যে বিবিচিনি ইউনিয়নের কারিকরপাড়া খাল, গড়িয়াবুনিয়া, নাপিতখালী, সিদ্ধান্ত, সদর ইউনিয়নের কবিরাজের খাল, বাসন্ডা, বেড়েরধন, লক্ষ্মীপুরা, হোসনাবাদের উত্তর কাটাখালী, ধনমানিক চত্রা, জলিসা, মোকামিয়া খাল, কাজিরাবাদ খাল, ভোড়া কালিকা বাড়ি খাল উল্লেখযোগ্য।
এসব খালের ২৪টি স্লুলিজ গেট দিয়ে পানি ওঠা-নামা করছে। স্লুলিজগেটে লোহার প্লেট বসিয়ে পানি ওঠা-নামা করানো হচ্ছে। স্রোত না থাকায় ২৪টি খাল পলি পড়ে শুকিয়ে গেছে। শীতের মৌসুমে পৌষ মাস থেকে চৈত্র মাস পর্যন্ত কোনো পানি থাকে না। বাকি ১৪টি খালে পানি তলানিতে থাকলেও তা কোনো কাজে আসছে কৃষক ও জেলে পরিবারগুলোর।
বেতাগী সদর ইউনিয়নের ঝোপখালী গ্রামের বাসিন্দা জেলে মোশারেফ হোসেন জানান, এবার আমাদের খুব কষ্ট হচ্ছে। কোনো খাল-বিল, এমনকি বেড়েরধন নদীতে পর্যন্ত পানি নেই। বেকার দিন কাটাচ্ছি।
একই এলাকার অন্য একজন জেলে লিটন (৩৫) বলেন, এ অবস্থায় জেলে পরিবারের সদস্যদের দিন কাটছে অর্ধাহার-অনাহারে।
খাল-বিলে মাছ না পেয়ে শীতের মৌসুমে সবজি ও শিশুদের খেলনা ফেরি করে সংসার চালাচ্ছেন জেলে পৌর শহরের ৩নম্বর ওয়ার্ডের ভব রঞ্জন। তিনি বলেন, ছোট-খাটো খাল ও নদীতে পানি নেই, মাছও নেই। তাই এসময় ফেরি করে কষ্ট করে সংসার চালাতে হচ্ছে।
এ বিষয় উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো. আব্দুল গাবফার বলেন, মাছ ধরা নিষিদ্ধের সময় উপজেলার ৩ হাজার ৮০ জনকে সহায়তার চাল দেওয়া হয়।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. সুহৃদ সালেহীন বলেন, খালগুলো খনন করার জন্য তালিকা প্রেরণ করা হয়েছে। তবে প্রয়োজনীয় বরাদ্দ পেলে খনন করা হবে।
Leave a Reply